জামদানির আসল-নকল
আপনার শখের জামদানি টি আসল তো? এই লেখাটি পড়ার পর আপনি নিশ্চিত হতে পারবেন।
বিগত কয়েক বছর ধরেই সস্তার নকল জামদানিতে বাজার ভরে গেছে। আসল জামদানি শাড়ি হয় হাতে বোনা। তাই এর ডিজাইন হয় খুব সূক্ষ্ম ও নিখুঁত। ডিজাইনগুলো খুব মসৃণ হয়। তবে ডিজাইন আর রং দেখে আসল-নকল জামদানি বিচার করা কিন্তু বেশ কঠিন। আজকে আমরা একটি খুবই কার্যকর পদ্ধতি শিখব যাতে করে আপনারা সহজেই আসল বা নকল জামদানির তফাত করতে পারেন।
জামদানি কেনার সময় ৩ টা বিষয় অবশ্যই খেয়াল রাখা উচিৎঃ
১) আসল জামদানি শাড়ি হয় হাতে বোনা। জামদানি শাড়ি মিহি সুতায় বোনা হয়। এর ডিজাইন হয় খুব সূক্ষ্ম ও নিখুঁত। ডিজাইনগুলো খুব মসৃণ হয়। হাতে বোনার কারণে সামান্য ফাঁকা থাকে বুননে। মেশিনে বোনা জামদানির বুননে ফাঁকা থাকে না একেবারেই। তাই শাড়ি তে যদি এমন ফাকা ফাকা না দেখতে পান, তাহলে বুঝে নিতে হবে, ওই শাড়ি টি হয়তবা আসল নয়।
২) আসল জামদানি চেনার সবচেয়ে কার্যকরী উপায় হলো শাড়ি উল্টে দেখা। জামদানির পিছন দিক লক্ষ্য করলেই আসল-নকল চেনা সহজ হয়ে যাবে। তাঁতিরা প্রতিটি সুতা হাত দিয়ে ঘুরিয়ে ফিরিয়ে বুনন করেন জামদানি। তাই এই শাড়ির সুতার কোনো অংশ বেরিয়ে থাকে না। যন্ত্রে বোনা কাপড়ের পিছনে সুতার কাটা অংশ চোখে পড়ে। জামদানি শাড়ির উল্টো দিকে যদি সুতা কাটা দেখেন, তবে বুঝবেন এটা মেশিনে বোনা জামদানি। গায়ে পরলে শরীরে কাপড়ের কাটা সুতাগুলো লাগে। কিছুদিন ব্যবহার করলে সুতার কাটা মাথাগুলো খুলে নকশা নষ্ট হয়ে যেতে পারে।
জামদানি শাড়ির সামনের দিক ও পিছনের দিকের বুনোট কিন্তু একই রকমের হয়। আসল জামদানির পিছন দিকেও সুতার কাজ প্রায় একই রকম মসৃণ থাকে। জামদানি শাড়ির কোন্টা সামনের অংশ আর কোন্টা ভেতরের অংশ, তা পার্থক্য করা বেশ কঠিন। হাতে বোনা জামদানির পেছনেও একেবারে নিখুঁত ফিনিশিং থাকে। এটি পরিধানের ক্ষেত্রে যেমন আরামদায়ক, তেমনি সুতা কাটা থাকে না বলে খুলে আসার সম্ভাবনাও কম।
৩) আসল জামদানির ক্ষেত্রে শাড়ির প্রথম দুই থেকে পাচ হাত অংশে কোনও কাজ থাকে না। অর্থাৎ কোমরে যে অংশ গুঁজতে হয়, সেখানে কাজ থাকে না। মেশিনে বোনা জামদানির কারুকাজ শুরু হয় একেবারে কোমরের অংশ থেকেই। তাই মেশিনে বোনা শাড়িতে পুরোটাই পাড় থাকে। নাইলনের সুতা দিয়ে তৈরি হয় বলে একটু ভারিও লাগে। হাতে বোনা জামদানির ওজন যেমন হালকা হয় তেমনই পরেও আরামদায়ক।